৫ বার টিটি টিকা নিতে হয়। এ টিকা যে-কোন সময়ে নেয়া যায়। তবে সরকারী কর্মসূচি অনুযায়ী ১৫ বছর বয়স থেকে টিকা দেয়া শুরু করতে হয় এবং নীচের সময়সূচি অনুযায়ী সারাজীবনে ৫ বার টিটি টিকা দিতে হয়। পুরা ডোজ শেষ করতে মোট ২ বছর ৭ মাস সময় লাগে। কখন টিটি দিতে হবেঃ
- টিটি ১ম ডোজ ১৫ বছর পূর্ণ হবার পর অথবা গর্ভবতী হলে ৪র্থ মাস থেকে।
- টিটি ২য় ডোস টিটি ১ম ডোস দেয়ার ৪ সপ্তাহ পর। টিটি ৩য় ডোস
- টিটি ২য় ডোস দেয়ার ৬ মাস পর অথবা পরবর্তী গর্ভবতী অবস্থায়।
- টিটি ৪র্থ ডোস ৩য় ডোস দেয়ার ১ বছর পর অথবা পরবর্তী গর্ভবতী অবস্থায়।
- টিটি ৫ম ডোজ টিটি ৪র্থ ডোস দেয়ার ১ বছর পর অথবা পরবর্তী গর্ভবতী অবস্থায়।
ঋতুস্রাব সম্বন্ধীয়ঃ
- মাসিক ঋতুস্রাব একটি স্বাভাবিক দৈহিক প্রক্রিয়া।
- ৩ থেকে ৭ দিন পর্যন্ত থাকে, সাধারনতঃ ২৮ দিন পর পর হয় ।
- এ সময় সবরকম খাবার খাওয়া যায়। তবে এ সময় পুষ্টিকর খাবার খাওয়া প্রয়োজন।
- এ সময় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হয়।
- ঋতুস্রাবে স্যানিটারী ন্যাপকিন ব্যবহার করা ভাল। তবে শুকনো পরিস্কার কাপড়ও ব্যবহার করা যায়। ব্যবহারের পর সেগুলি ভাল করে সাবান পানি দিয়ে ধুয়ে রৌদ্রে শুকিয়ে পরিস্কার জায়গায় রাখতে হবে যেন কোন ধূলা বা ময়লা না লাগে।
- এ সময় তলপেটে অল্প ব্যথা অনুভূত হয় কিন্তু বেশী ব্যথা বা খুব দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
- ঋতুস্রাব ৭ দিনের বেশী বা এক মাসে দুবার হলে বা অধিক মাত্রায় রক্তক্ষরণ হলে বা প্রায়ই অনিয়মিত বা বন্ধ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
- এ সময় নিজেকে অশুচি ভাবার কোন কারণ নেই। প্রাত্যহিক কাজকর্ম স্বাভাবিক ভাবে করাই বাঞ্চনীয়।
সাদাস্রাব বা চুলকানিঃ
- যোনীস্থানে সংক্রমণ বা প্রদাহের জন্য সাদা স্রাব বা চুলকানি হতে পারে।
- যৌন মিলন ছাড়াও মাসিকের সময় ব্যবহ্রত কাপড় বা অপরিচ্ছন্ন অর্ন্তবাস থেকে এ সংক্রমণ হতে পারে। মারাত্বক অপুষ্টিজনিত কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলেও এই সংক্রমণ হতে পারে।
- সাধারণতঃ ট্রাইকোমনাস নামক পরজীবি বা ক্যানড্ডিা নামক ছত্রাক দিয়ে এই সংক্রমণ ঘটে থাকে। তাই চিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসা নিয়ে নিয়ম মতো ঔষধ খেলে, পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকলে এবং পুষ্টিকর খাবার খেলে এই রোগ সেরে যায়।
- বিবাহিত কিশোরীদের স্বামী সহ চিকিৎসা করতে হবে।
- শরীরের অন্যান্য অংশের রোগের মত এটাও একটি অসুখ, এ নিয়ে লজ্জা পাওয়া উচিত নয়।
স্তনের সমস্যা জনিতঃ
- বয়ঃসন্ধিকালে স্তনে ব্যথা হওয়া স্বাভাবিক, বিশেষত ঋতুস্রাবের আগে বা ঋতুস্রাব চলাকালীন সময়ে।
- স্তনে চাকা অনুভূত হওয়া বা স্তনের বোটা থেকে রস নিসৃত হলে অবিলম্বে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
- পরিস্কার এবং সঠিক মাপের অর্ন্তবাস পরা উচিত। খুব ঢিলা বা খুব টাইট অর্ন্তবাস পরা উচিত নয়। আমাদের দেশের আবহাওয়ায় সূতী আর্ন্তবাস পরা আরামদায়ক এবং স্বাস্হ্য সম্মত। রাতে ঘুমাবার সময় অর্ন্তবাস খুলে রাখা উচিত।
পুষ্টিঃ
- বয়ঃসন্ধিকালে পুষ্টি খুবই প্রয়োজন। কারণ এই সময় শরীর দ্র“ত বৃদ্ধি পায়।
- এ সময় পুষ্টিকর খাবার না খেলে শরীরের বৃদ্ধি হয়না। ফলে বয়সের তুলনায় সঠিক ওজন ও উচ্চতা লাভ করতে পারেনা।
- আয়রন এবং ভিটামিনের অভাবে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। বিশেষ করে ঋতুস্রাবের ফলে কিশোরীদের মধ্যে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়। এদেশে অনেক মেয়েই কৈশোরে মা হয়। তাদেরও অপুষ্টি ও রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়। রক্তস্বল্পতার কারণে যে কোন কাজেই অল্পতে ক্লান্তি আসে।
কম বয়সে বিয়ে এবং গর্ভধারণঃ
- বাংলাদেশ সরকারের আইনুযায়ী মেয়েদের ১৮ বৎসরের আগে আর ছেলেদের ২১ এর আগে বিয়ে করা দন্ডনীয় অপরাধ।
- শরীর পূর্ণতা লাভের আগে বিয়ে করলে এবং সন্তান ধারণ করলে মা ও শিশুর উভয়েরই মৃত্যু ঝুঁকি থাকে ।