Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

বয়ঃসন্ধি কালে মানসিক পরিবর্তনের ফলে কিশোর-কিশোরীদের আচরণগত বৈশিষ্ট্য সমূহঃ
  • এ সময় কিশোর-কিশোরীরা আত্মনির্ভর হতে চেষ্টা করে
  • স্বাধীনচেতা মনোভাব পোষন করে এবং সব বিষয়ে স্বাধীনতা চায়
  • অনেক নতুন বন্ধু-বান্ধব এর সাথে মেলামেশা করে
  • নতুন কিছুর দিকে আগ্রহ থাকে
  • আত্ম সচেতন হবার কারণে নতুন নতুন পোষাক এবং ফ্যাশন সচেতন পোষাক এর দিকে বেশী মনোযাগী হয়
  • খাবার দাবার এর প্রতি অনীহা দেখায় এবং কিশোরীরা কম খেয়ে ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখতে চায়
  • বাবা মা বা পরিবারের সান্নিধ্যের চেয়ে বন্ধু-বান্ধবের সহচর্য বেশী পছন্দ করে
  • গোপনীয়তা বজায় রাখতে চায়, তার নিজস্ব একটা জগত তৈরী করে নেয়
  • স্নেহ ভালবাসার জন্য সর্বস্ব ত্যাগ করতে প্রস্তুত থাকে
  • পারিপার্শ্বিক পরিবেশের সাথে সহজে খাপ খাওয়াতে পারে না
  • বয়ঃসন্ধিকালে শারীরিক পরিবর্তনের কারণে নিজেকে নিয়ে বিব্রত থাকে

 

বয়ঃসন্ধিকালে মানসিক পরিবর্তনের জন্য কিছু সমস্যা ও সমাধানে পরামর্শঃ

 

রাগঃ
রাগ হওয়া একটি ব্যক্তিগত অনুভূতির প্রকাশ। নিজের আশানুরূপ কাজ বা কথার অন্যথা হলে মানুষের রাগ হয়। রাগ হওয়া কোন অনুচিত বিষয় নয়। তবে লক্ষ্য করতে হবে রাগের প্রকাশ যেন সীমা অতিক্রম না করে । রাগের প্রকাশ এমন হওয়া উচিত নয় যা অন্যকে মানসিক বা শারীরিকভাবে আঘাত করে বা অন্যের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করে। রাগ প্রকাশ করার সময় গাল দেয়া, খারাপ কথা বলা, কারো পিছনে কথা বা দুর্বলতার কথা বলে তাকে উত্তেজিত না করা এ সব বিষয়ে সচেষ্ট হওয়া উচিত।

রাগ কমাতে হলেঃ

  • নিদির্ষ্ট বিষয়টি নিয়ে পরিস্কার ভাবে আলোচনা করে ধারণা স্বচ্ছ করা।
  • রাগ পুষে না রেখে তখনই মিটিয়ে ফেলা এবং ভুলে যাওয়া। সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য রাগ মিটিয়ে ফেলা ভালো।
  • রাগের সময় ধীরে ধীরে এবং গাঢ় শ্বাস নিলে উপকারে আসে।
  • সম্ভব হলে রাগের পরিস্থিতি থেকে সাময়িকভাবে কিছুক্ষনের জন্য হলেও সরে যাওয়া এবং শান্ত হওয়ার জন্য সময় নেয়া।
  • অন্য কোন বিষয় নিয়ে কথা বলা।
  • নিজের এই সময়ের মনোভাব ডায়রি বা কাগজে লিখে রাখা।



সমবয়সীদের অন্যায় দাবী মানতে না পারা বা তাদের দ্বারা প্রত্যাখিত হওয়াঃ
এরকম অবস্হা কিশোর কিশোরীদের পক্ষে সহজে সহ্য করা সম্ভব হয় না। এতে তারা নিজেদের খুব ছোটভাবে এবং মুষড়ে পড়ে।

এই অবস্হার মোকাবেলা করতে হলে-

  • যুক্তি দিয়ে বিষয়টা বুঝতে বা বুঝাতে হবে। অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে নিজেকে বুঝতে হবে।
  • মূল্যাবোধের সঙ্গে আপোষ করা যাবে না।
  • যে প্রত্যাখান করেছে তার সঙ্গে বা অন্য বন্ধু ও বয়স্কদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলা।
  • যারা প্রশংসা করে বা যারা সমমনা তাদের খুঁজে নেওয়া।

 

ব্যর্থতাঃ

সবাই চায় কোন কাজে সফল হয়ে দলের সদস্যদের প্রশংসা পেতে। কিন্তু বিপরীত কিছু হলে মানুষ লজ্জা পায়, অপমানিত বোধ করে এবং মুষড়ে পড়ে। সাধারনতঃ লেখাপড়া, খেলাধুলা ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক কাজে এরকম হয়ে থাকে।

এই অবস্হার মোকাবেলা করতে হলে-

  • ব্যর্থতার কারণ খুঁজে দেখা ও বিশে-ষণ করা।
  • সাফল্য ও ব্যর্থতা জীবনেরই অংশ একে মেনে নেওয়া ।
  • বাস্তব ভিত্তিক লক্ষ স্থির করা।

 

ব্যঙ্গ/বিদ্রুপ/ঠাট্রাঃ

অন্যের দ্বারা উচ্চারিত নিজের প্রতি কোনো অপমানকর শব্দ/কথা বা অঙ্গভঙ্গি মানুষকে কষ্ট দেয়, অপমান করে, মন খারাপ করে দেয় এবং অপ্রস্তুত করে।

এই অবস্হা থেকে নিস্তার পেতে হলে-

  • বিষয়টিকে আমল না দেয়া
  • ঠাট্টাকে ঠাট্টা হিসাবে নেয়া
  • যে ঠাট্টা করেছে তার সঙ্গে খোলাখুলি আলাপ করা
  • ভাল উপদেশ হিসাবে গ্রহণ করা

 

দ্বন্দ্ব / সংঘাতঃ

দ্বন্দ্ব্ব / সংঘাত তখনই হয় যখন প্রত্যাশা অনুসারে প্রাপ্তি হয় না, পুরুষ মহিলার গতানুগতিক দায়িত্ব বা ভূমিকা প্রত্যাশা অনুসারে না হলে দ্বন্দ্ব বা সংঘাত বাধে।

যে সব কারণে দ্বন্দ্ব বা সংঘাত হয়, তা হলো-

  • মূল্যবোধের গুরুত্বের পার্থক্য হলে দ্বন্দ্ব হয়
  • পদ মর্যাদা ক্ষুন্ন হলে দ্বন্দ্ব হয়
  • ব্যক্তিত্বের পার্থক্য হলে দ্বন্দ্ব হয়।


পিতা মাতা কিশোর কিশোরীদের মধ্যে যে সব বিষয়ে দ্বন্দ্ব বাধে তা হচ্ছে-

  • আধুনিক ফ্যাশন অনুযায়ী চাল চলন
  • ব্যক্তিগত খরচের আকাঙ্খা
  • ধর্ম পালনে অনীহা
  • সম্পর্কের পছন্দ অপছন্দ
  • জীবিকা বাছাই
  • ব্যাপক স্বাধীনতা


দ্বন্দ্ব নিরসন করা একান্ত আবশ্যক। তা না হলে সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

দ্বন্দ্ব নিরসনের উপায় হচ্ছে-

  • অবস্হাকে মেনে নেয়া
  • খোলাখুলি আলোচনা করা
  • যুক্তি নির্ভর অবস্থার সৃষ্টি করা
  • মিলে মিশে থাকা
  • গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি পুনবিন্যাস করা
  • বাবা-মা সব সময় সন্তানের ভাল চান। তাই তাঁদের উপদেশকে কল্যাণকর মনে করে বিষয়টি নিয়ে ভাবা উচিত ও পালনে সচেষ্ঠ হওয়া উচিত

 

দুশ্চিন্তা / মানসিক চাপঃ

জীবনের চাহিদা মেটাতে না পারলে দুশ্চিন্তা হয়। দুশ্চিন্তা যখন সহ্য ক্ষমতা ছাড়িয়ে যায়-তখন পরিস্থিতির অবনতি হয়। কৈশোর কালের মানসিক চাপের কারণ দৈহিক ও মানসিক পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়াতে না পারা।

দুশ্চিন্তা মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পেতে হলে -

  • শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে হবে
  • খোলাখুলি আলোচনা করা
  • জীবন যাত্রায় কৌতুক ও রসবোধ জাগাতে হবে
  • জীবনের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব রাখতে হবে